জয়ীতা ব্যানার্জী
স্মরণাতীত
১
আমার
বিভাব তুমি এভাবেই লিখেছ কবিতা
তুচ্ছ, আড়ম্বরহীন। রাঢ়ে, মোলবনে যেরকম
পয়লা
আষাঢ়। দীর্ঘ
জাতীয় সড়কটির পাশে
সংক্ষিপ্ত
মাঝিপাড়া, রংধনু মাটির দেওয়াল
আমার
বিভাব তুমি এভাবেই এঁকেছ পরাণ
পোড়ো
বাসুলীর থান; ঘন দীঘিজলে অপরাহ্ণ
ফুটেছে
একাটি। যেন
কৃষ্ণে পাওয়া আকাশের সুখ
পয়ারে
বাঁধতে বসে চণ্ডীদাস মাথুর চিনছেন
২
তোমাকে
পাইনি আমি, এই গরিমাও কম নয়
অনেকটা
পথ এসে হঠাৎ কখনও কোনও বাঁকে
বটের
ছায়ায় রাখা মানত শিলার প্রতিরূপে
ঝুমঝুম
হাওয়ার মন্ত্রে হয়তো তোমাকে পাব
এ
প্রবোধে আলো দেখা যায় ওই সেগুনের বনে
আমি
পথশিশুটির মতো উদাসীনতায় যেন
তার
গভীরে কোথাও ইঁদারার খোঁজে অবিচল
ধুলো
থেকে বেছে বেছে নুড়ি আর বাতাসা কুড়াই
৩
সফর
ফুরোলে আমি চেয়ে নেব সব কুশলতা
শীতের
প্রথম রোদ, আহত পাখির দানাপানি
দম্ভের
করুণ নীতি এই; অসময়ে কোনকিছু
চাইতে
পারে না। শুধু
পথের উপান্তে এসে তার
মনে
ধরে বাতাসের কাঁদনগীতিকা,
ধুলো,
চারণকবির
বাদ্য, পরিত্যক্ত নলকূপ ঘিরে
যূথচারী
কীটদের কর্মনিষ্ঠা ও বিপজ্জনক বাঁকে
একা
একা জেগে থাকা দস্যুদের উপাস্য দেবীটি
৪
বিকেল
শেষের স্তবে হাওয়ার ভূমিকা এরকম-
যে
সুর বুঝি না আমি; মাদকতায় যেন তার-ই
কাছাকাছি
আসি। দূরে
কোথাও নব্য কিশোর এক
সৌখিন
বাঁশিটি হাতে মেঘ লিখছেন। স্থিরতর
অতীতের
থেকে তার বৈভব উঠানে ঝরে পড়ে
প্রেম, যা প্রকৃতপক্ষে অলৌকিক;
ফিরে দেখবার
সাধ
হয়। পরিত্যক্ত
মঠে সহসা ধূপের ঘ্রাণ
যেমন
বাস্তবতাকে পরিহার করে ফিরে আসে
৫
স্মরণাতীত,
তোমাকে কী নামে ডাকি? শব্দহীনতা
কতকাল
পর আজ আমাকে দিয়েছে স্থিরতর
নক্ষত্রের
মায়া, তৃপ্তি, আকুলতা, স্মরণ,
শ্রাবণ
চিতার
বিস্মিত ধোঁয়া; যেন নাভি ফাটবার শব্দে
তার
নিজেরও চমক লেগেছিল
-- এই স্মৃতি ফের
আমাকে
অবচেতন, এনেছে নদীটি ফেলে সেই
বর্ষণে, রাতে, তুলসীছায়ায়; যেখানে শান্তিজলে
প্রথম
চিনেছি শোক, প্রিয়জন, আলো নিভে যাওয়া
৬
মুগ্ধপাঠ,
সহসা তোমাকে আবিষ্কার করি এই
মধ্যাহ্ন
প্রহরে। ক্ষীণবেগ
জলধারাটির মতো
পাথর
ও সম্ভাবনা, যেন উভয়-ই ডিঙিয়ে গেলে
আলোর
সহজ থেকে ছায়ার জটিলে;
ঈর্ষণীয়
তোমার
চলন। অদৃশ্যে
অপেক্ষমান চতুর্থীর
টলটলে
চাঁদ আর সারসের সঙ্গ প্রার্থনায়
বিব্রত
ঘোর বর্ষণকাল, কিশোরীর বাজুবন্ধ,
বাসনের
সারিগান -- পাঠকের ক্রিয়া এইটুকু
৭
এ
পথ, শ্রাবণ যেন আমারই ভিতরে শেষ হল
তৃতীয়
ঘণ্টাধ্বনি ও একে একে ঝরছে বকুল
ভোর, পুনর্জন্ম-ভ্রম, বর্ষা শেষের আয়োজন
এইসব
বোধ থেকে দূরতর তুমি ও তোমার
তুলনা
আমাকে শান্তি দেয়। ব্যবহৃত
পোষাকের
ঘ্রাণ-ঘোর যেরকম;
চমৎকৃত না হয়ে একই
শ্বাস
ফিরে ফিরে নিতে ইচ্ছে করে। অতিথি যাবার
পরেই
মা যে কারণে একমনে ঘর গোছাতেন
খুব ভালো লাগলো
ReplyDeleteধন্যবাদ।
Deleteখুব ভালো লাগলো
ReplyDeleteধন্যবাদ জানবেন।
Deleteঅনবদ্য লেখা।
ReplyDeleteধন্যবাদ অর্ক।
Delete