স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায়
ক্রাইম থ্রিলার অথবা রহস্যগল্প
গল্প- ১
কালো
কোট হ্যাঙারে ঝুলছে
ভাঙা
কাচ ঘরের মেঝেতে
টুকরো
ছড়িয়ে রোদের ঝলক
ঘর
মানে ড্রয়িংরুম
সরু
আলো চুইয়ে পড়ে ফ্যাটি
পাখনার
ভিতর ছিঁড়েছে
ঝাড়ের
পেয়ালায় মোমবাতি তখনও ঘন
ছুরিটি
পড়ে আছে রক্তের গল্পকথা মেখে
আততায়ী
রেখে গেছে এস্ট্রেধোয়া ছাই
আর
বুক মোচড়ানো সিগারেট
গল্প – ২
তদন্ত
চলছে ঘাড় মুড়ে পড়ে আছে খরগোস
সে
দুরন্ত ছিলো এক এক করে শিকলের মরচে ছাড়াতো
সমস্ত
সিঁড়ি এবং নাগকেশরের ফুলখেলা টপকে
গাছগাছালির
ফাঁক দিয়ে আসা রোদ্দুর ধরতে গিয়েছিলো
ঘরে
ঘরে যৌনতার ছবি টাঙানো তবু সে ছেলেমানুষ
মদ
এবং মেয়ের স্পর্শ থেকে দূরের প্ল্যাটফর্মে
টিকিট
কেটেও দেখুন তার রক্তের দানা কেমন লাল
রুমালের
সলিলকি ধাপে ধাপে আঁশগন্ধ টানছে
ডিভান
এখন পুলিশি টুপি ওল্টাচ্ছে ফ্যানের হাওয়ায়
জমাট
দর্শক মাথা থেকে খুলে রাখছে পূর্বপরিচয়
গল্প- ৩
গ্রামোফোন
পুরোনো খুব পিন বেঁকে আছে
দুপুরের
ছায়াপোড়া রোদ মুনিয়ার মতো খেলছে
দুই
দুই পায়ের তফাতে ভিড় জমেছে গাছটবের
নাইটির
হুক খোলা হাঁটু অবধি তোলা সুতো
ঠোঁটের
আগলে মাছির বোঁ বোঁ ঝাপট
লেডিস
রিভালভার রূপোলি ধাতুর নল
ড্রেসিং
টেবিলের ঘরে পুরুষ পারফিউম
লাশঘর
ডাকছে তাকে যে মৌমাছি প্রতিরোধে ছিলো
পূর্ণিমা
১
পায়েল
কাঞ্জিলাল। ভিকটিম। বয়স অনূর্ধ্ব কুড়ি।
হলুদ
চুড়িদার। শ্যামবর্ণা। ডাহুকের মতো সুন্দরী। ডান
হাত
ছেঁড়া। আঙুল কেটে পড়ে আছে হারমোনিয়াম রিড।
ঠোঁটের
ভেতর ছ’আউন্স আলো ছিলো। পায়ের গোছে
তক্ষকের
ট্যাটু জেগেছিলো সারারাত।
২
ঋতু
মজুমদার। বিনুনি গভীর। ট্যুরিস্ট। চা বাগানে
কমলালেবুর
ক্ষেত দেখতে এসেছিলো। আঠারো। তাই
গ্রীষ্মকেও
বসন্ত ভুল করে। ছাপা ফ্রক। ফর্সা। আয়ত
চোখে
এখন আকাশ জলবাড়ি খেলছে। কষে সামান্য
নল
ফেনা। পায়ের চিহ্ন গড়িয়ে গেছে গতরাতে
ঘড়ির
দিকে। আড়াইটে।
৩
গোপাল
আদক। নামের গোলাকার চেহারায় নেই।
তোবড়ানো
গাল। তিরিশ যুবক। বাঁ দিকের টেরি বরাবর
পাটক্ষেতে
লুকিয়ে ছিলো। ছিপ। চারের কৌটো।
বাঁশের
চুপড়ি। চেক লুঙ্গির গিঁটে কোন অজানা শিশ
লুকোনো
ছিলো। হয়তো। রাজনীতি স্ট্যাম্প মারেনি
এখনো।
জলার ধার শেষ গন্তব্য। ও হ্যাঁ কানভাঙা এক
রেডিও
মিলেছে পাশে। মারফি। ভোররাত। মাছের আঁশগন্ধ
বাতাসের
ভারি ধাতু উগড়ে দিয়েছে।
৪
ইউসুফ
জামাল। কবি। তিরওঠা ঝোলাব্যাগ।
কবিতার
খাতা। ধূসর পাঞ্জাবি। চল্লিশের এলোমেলো
ঘর।
ছাঁটা চুল ঘাড়ের পালক অবধি। প্রান্তিক শহরে
এসেছিলো
জীবনানন্দের সোনালি চিলের সন্ধানে। খুদকুঁড়ো
খেয়ে
গেছে ধেড়ে ইঁদুর। শূন্য রাস্তায় শিরীষের নিচে
পাওয়া
গেছে। গা বেয়ে উঁইয়ের মাটি।
৫
ফুলমাঈ
সোরেন। ভিনিগার রঙ। তুষার চুল।
সত্তর।
মাঝরাতে মাঠকাজ প্রয়োজন ছিলো। আলের
উঁচুগাল
শিফনফল ঝিকমিক। দুধজ্বাল দেওয়ার মতো
আগ্রহী
ঝিম। জলভেজা ঝিঁঝিঁগন্ধ দৃশ্যত হাঁ ছিলো
চিবুকের
ফাল। লক্ষ্মীপেঁচা অবাক জইগাছে।
ইয়োর
অনার, পাঁচটি কেসই রাতের আলোয়। আসামী
চন্দ্রকুমার
অতিউজ্জ্বলকে খুনের দায়ে কাঠগড়ায়
তোর এইবারের লেখা কবিতাগুলো দারুণ লাগল! অনেকদিন পর।
ReplyDeleteএই প্রেজেন্টেশন আমার কাছে সত্যিই ভীষণ উত্তর-আধুনিক। বিশেষ করে পূর্ণিমা।