।। বাক্ ১৪৩ ।। অভি সমাদ্দার ।।




অভি সমাদ্দার

পিছলভূক-১

তুমি ভাবছো এ এক জটিল অঙ্কুর! 
অথচ
আমরা শ্যামলছাপ যন্ত্রণা
গুছিয়ে রাখি,প্রতিদিন
এক পশলা গোধূলি
কিম্বা আমাদের অনুক্ত
রক্তবোধ
কখনও ফুরিয়ে যায় না
শুধু মাঝে মাঝে পাখি ছায়া
মাড়ানো যে মোরামপথ
তার উদারদস্তুর ফিরে আসে
মনসন্তুর উপর টুপটাপ 
শিরিষ পতন    
এছাড়া ডালিমের জন্য ডালিম 
এছাড়া টুকু দিন আর ধোঁয়াবিল
পেয়ালাসমূহে নেমে আসে 

চাঁদ ও চিয়ার্স    


পিছলভুক-২

জানি, আমিই আমার অমাসমূহ
তবুও চেয়েছি তুমি 
তোমার অনুস্বরে আলো হ'য়ে ওঠো
একতারাটির উধাও সফল 
মনথোকাটির রং-এর বিষাদ 
চেয়েছি তুমি তার সঙ্গে  চলো

এক          নিখিলস্টিকার থেকে

এক          ছলাৎনির্জন

এ টুকুই গন্তব্য আমাদের
এ টুকুই ঝুরোলীনসখ্যসেলাই 
যেন একটি জীবন থেকে 
ঝরা গোধূলির আলো শুষে নেয়
অন্তর মহিমা 
সরল ও সৌকর্যে 
তল ময়ূর খুঁটে নেয়,শান্ত 

পেখম পেখম বেদন বিরানা !


পিছলভুক-৩

আমাদের  যা আছে তা শুধু  সাঁঝিম দিনকাল
সঘন শালপথেে 
দু'একটি তারার পথে 
যেসব অদ্য রজনী নেশাচুর ঘটে
যেসব গহনাগহন ঘটে 
সেই চিত্রল ক্যানভাসে

তুমি রং-এর মিশ্রণ

কখনও দূরের বাহানা  খুলে দেয়
কখনও  কাছের মিশুকে পায়রা
এসব নিয়েই এই সুরং চলাচল
মর্মে মর্মে তল ও তিক্ষা  সাধনা 
তুমি দূর্বা রং-এ রুরাল কনডর বুনে যাও
আমি রাধে রং-এ হৃদিনীর

সুফি জলস্বর!



পিছলভুক-৪

ধরো, আমি তোমাকেই ডাকছি সসীম 
দিনকাল  রাত্রিকাল
জোছনপাড় ও কাঁচা তরলে  
ছুঁয়ে থাকা ঝরাপথের যেটুকু স্থা
তুমি তার নীভু জলে সকল পরম হও
আমি থেকে আমার সম
সকল ফতুর হয়
আর রাস্তা বুনতে বুনতে
কতো যে কাঙ্খার শ্রাবণ জড়ালো
এতো যে হদিস হাঁসফাঁস 
তারই যতন ইতিহাসে
তোমারই পিচ্ছিল
ফসল তুলছি 
শ্বাসের তিনকা শিস তুলছি

ভাঙা লাইনের  সাঁঝে খাঁজে



পিছলভুক-৪

যখন মনটই চাঁদ
তুমি তখন ঝরে পড়ছো নৈশীক অন্তরে 
এই তো মায়া ঝিল্লি     এই এতো আলোর উদাস
দু'দিকেই টেনে রাখা সখ্যরেখা
দু'দিকের পান্থ তরল
নির্বান ও লম্ফ
তোমাকেই ডাকছে অক্ষরে
পাশের কক্ষে খুব গোপন জলস্রোত 
তোমাকে নির্জনে ডাকছে
তুমি সেই ডাক জমিয়ে 
শাল, প্রান্তর, ডহর, থেকে 
হৃদি, কাঙ্খা, বিষাদ থেকে কবিতা লিখছো
এক দুরু-প্রতিম ছলবাগান
জড়িয়ে মাড়িয়ে জড়িয়ে মাড়িয়ে 

হৃদিনী ও হরফে

বুনে যাচ্ছো 

পিছলছোপ আত্মভাষা! 


পিছলভুক- ৫


মন তোরণের দিনে 
মন পিছলের দিনও মুচড়ে ওঠে
তখন নদীর পাশে তুমি হাঁটো 
আর কুটির মধ্য থেকে সেই দিনের দেবতা
সকলকে স্বাক্ষরসহ বাঁধিয়ে দেয় 
দৃশ্য করুণা 

তুমি ভাবো, রোজ এতো স্খলন খুঁটিয়ে 
কে লিখে যায় জীবন  অথৈ 
কে সাজিয়ে দেয় ছায়া ছায়া পথের শূন্য-
'নিতের তরল উসখুস 
কে ডেকে আনে মোরাম প্রান্তরে

এইসব সচল ও প্রশ্নে 
ছলকে ওঠার  ইলাজ নিয়ে 
কেবল দিন যায়। আর  সন্ধ্যা হয়। 
দিন যায়। আর ঝরে যায় 

দিকে দিকে পর্ণকুসুম! 



পিছলভুক- ৬

বেঁচে থাকা- একটা কী যেন অর্থ ফঁাকির ভেতর থাকা
দেশকালের 
মানুষে- মানুষের 
সম্পর্কও যেন এক বস্তুগুন
ছুঁলে ছুঁয়ে থাকা থাকলে আছে 
মনস্পর্শেই বা কতোটুকু আছে
কারো  না থাকার শূন্যদাগ
কেবল আয়নায় প্রতিবিম্বিত হয়ে আছে 
আতার নিসর্গের একলা তুমি 
জলের তল খোলামে নিরর্থক তুমি

তুমি  তুমি  তুমি 
আর তার অকারণ ঐশী  রোদ! 



পিছলভুক-৭

দিন ছিল নাদান ভরা রং-এ
ছিল হাসির হরফহীন ভাষা
তুমি চোখ মটকে 
শাসন ব্যবস্থায় ডেকে নিলে
আমিও দিন মটকে 
বাঁধন ব্যবস্থা ছিঁড়ে গেছি
এই তো অনুযোগ, এই ছিল সকল ক্লান্তি 
যেন জনে জনে রটনাপ্রধান
দূর অস্ত
ছড়িয়ে গেছে দিকে দিকে 
আমি আমার থেকে হুলুস্থুলু বাঁধিয়ে দেওয়া
এক মেহেজ শোরগোল 
কুড়িয়ে নিয়েছি
তুমি তোমার থেকে সুলেখা সন্তাপ
বদলি জীবনের বাঁচা
ফলতঃ  বাঁাচার অংশভুকে


ক্রিয়ার সহজ ঘটে 
যতো বুননভিক্ষুর হরফ ভেসে যায়


পিছলভুক-৮

আমি তো ছিলাম আর তুমি ছিলে
অন্তরবাসিনী
তাই কার্য্য কারণে যেসব গুমসুম 
প্রাত্যহিকী
তার আত্মনে রাত্রি ঢেলে 
আমি সাজিয়ে নিচ্ছি 
আলোর তিল ফলন
তুমি সাজিয়ে নিচ্ছ ছিঁটেফোঁটা
অক্ষর আহ্লাদ 
স্ফুট চলিতের মাপে
ফুটো আধুলির পারাপার
অথবা কিছু ঝরার মাপে 
কোন ঘাটে যে তাগাবাইন্দ্ধা পড়ে আছি
কতোকিছু যে হতাশ ফুটে আছে
তারই  আড়ং সামলাতে সামলাতে
ফিরে আসে ভাসান তিথি,
তাতে তুমি পৃথক হও
তাতে  আমি চটক হই
ভেসে যায়  পিছল দশক হাস্যগুলি



পিছলভুক-৯

তোমার হাতের সহজগুলি
তোমারই সীমার সহজতা
প্রান্ত নিঝুমে যে জন পক্ষ নিয়ে থাকে
তার তারিফ ও গুলমোহরে 
যেসব লেখ্য লাল সারাদিনের অক্লান্ত  ডেকে আনে
তুমি তার অনুর বর্ণন
নিত্য জটিলেই পাপড়ি মেলছেো
দক্ষ হাতে ছড়িয়ে  দিচ্ছ
পুং অন্তরে প্রকৃতি  পরম 
নিসর্গ ও লীনের সান্ত সেলাই
কিম্বা  আলোর সহজ ফুলে 
তোমারই আহত সুর 
টপকে যাচ্ছে  

এক...তিন...পাঁচ..আট 

নিয়ম-নিয়তি-নির্জন৷ ! 



পিছলভুক১০

পিছল ঘটনের এই পিপাসা
গান আমাকে ডাকে তার গম্ভীরা জলের আদরে
সাদর বাঁচার ফুটিফাটা থেকে 
উঠে আসে একান্ত অঝোর নিশিতল
যেখানে সুর এক সলতের মিহি 
দু'আনার কণিকা চত্বরে 
মন এক মনের মেরুকরণ 
দু'একটি  খসে পড়া
দূর  পাতায়
তুমি নামে তোমাকেই ডাকে
ছায়ার বিজন আঙুল
একটি তারের মুধুখোপে
জল আমাকে ডাকে তার বরোজ খুলে খুলে
প্রাণের সহজ খুলে


প্রতিবার ছায়ার জঘনে জড়াই

11 comments:

  1. Replies
    1. ধন্যবাদ গো পাঠে আসার জন্য। ❤

      Delete
  2. বাঃ,একসাথে পড়তে গিয়ে টের পাওয়া গেল, এই লালিত্য ও শব্দের কারুকাজ যুগপৎ কবিতাকে সুরম্যপাঠে প্রণোদিত করে।ইদানিং এমন কবিতা পাঠের অভিজ্ঞতা হয়নি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. পড়ছি। সংগ্রহ করছি, কয়েকটি পরে পড়ব। তুমি কথামৃত তিলে আনছ।

      Delete
    2. অনিমেষ খুব ভালো লাগল পাঠে এসেছো বলে।আমার আন্তরিক ভালোবাসা জেনো। ❤

      Delete
    3. অনিমেষ খুব ভালো লাগল পাঠে এসেছো বলে।আমার আন্তরিক ভালোবাসা জেনো। ❤

      Delete
    4. অনিমেষ খুব ভালো লাগল পাঠে এসেছো বলে।আমার আন্তরিক ভালোবাসা জেনো। ❤

      Delete
  3. ভালো লাগলো রে অভি।এর দু একটা বোধহয় আগে পড়েছি, আজ একসাথে সবটা পড়ে উঠে মনে হচ্ছে একটা শালবীথিতে হাঁটছি। কবিতা আমি তেমন বুঝি না,কিন্তু অনুভূতিতে এলো এই ছবি,বোধে নয়। ভালোবাসা নিস সাথে শুভকামনা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঋক তোর জন্য ভা'বাসা। তবে আমি আমার পাঁইট তোর কাছ থেকে ছাড়ছি না। আমার দাবী আমি সহাস্য জানিয়ে রাখলাম😃

      Delete