।। বাক্ ১৪৩ ।। অনিমেষ প্রাচ্য ।।


অনিমেষ প্রাচ্য

বল্মীকস্তূপ

আমাকে শব্দরন্ধ্রের ভেতর পুরে ফ্যালো,— য্যানো 
অপরাহ্নের পর তোমার শোক-দৃশ্যাবলি নিয়ে ভাবতে
গিয়ে, আর কোনো বসন্তঘুম এড়াতে না হয়।
বল্মীকস্তূপে তোমার হৃদয়কে নিক্ষেপ করি; স্পর্শ করো
এই পাশবিক অপদেবতাকে। তপোবনের আরও 
আশ্চর্য মায়াপাখিরা অভ্যস্ত হয়ে গ্যাছে সূর্যসঙ্গমের 
লীনে।
যদি এই ত্যক্ত মহাফড়িং, ঘাসের বিপুল সমাহারকে 
প্রেম বোলে অস্বীকার করে,— তবে কি তুমি সন্দিহান
হবে, ভালোবাসার বুদ্ধশ্রুত অঙ্গীকার নিয়ে?



স্মৃতিবিজ্ঞান

প্রশ্নের কাহিনী ফুঁড়ে বের হও আমার গোপন-আবর্তিকা।অন্ধকারের নৈরাজ্যে এই যে প্রচ্ছন্ন আকাশ, ব্যপ্ত নিধিবৃক্ষ, তোমার প্রস্থানলগ্নে আরও দৃঢ় হয় আমার চিহ্নবিজ্ঞানের ফোঁয়াড়া।
হঠাৎ এক কুমারীবৃক্ষ মেঘকুমকুম হয়ে আমার ভেতর এঁকে দিলো, এই চরাচর ঘুমশিশু।
কামিনীকুঞ্জে দ্যাখা দাও তুমি ফের, প্রিয় বাগ্মীশ্বরী
সমস্ত লালসার যৌনপুচ্ছ বিতাড়িত করে দেবো নীল নিভৃত ধ্যানে। 
ঈর্ষান্বিত পৃথিবীর কাছে, তোমাকে উন্মুক্ত করেছি 
আজগৃহদাহ হয়ে গ্যালে সবিশেষ
প্রস্থানের পরে, তথাপি রচনা করেছি, আশ্চর্য স্মৃতিবিজ্ঞান।



পাখিশাবক 

নগ্ন তোমার পিঠ। দেখতে দেখতে, আমি দেয়াল ভাবতে বোসেছি। প্রচ্ছন্ন এক বৃক্ষের কথা মনে পড়ে,— যে তোমাকে আঁকতে শিখিয়েছে এক প্রেতসাধনার স্তুতি।
নৈঃশব্দ্যে তোমার কথা শোনা যায়
একা; আরও ঢের বেশি
কতো গোপন কথা বলো?
কতো একা
অন্ধকারে থেকে,— তবুও আমার কর্ণযুগল শুনতে পায়, সেইশব নিস্তব্ধ ফানুস ওড়ানোর গান।
প্রতিবার চিৎকার কোরবার পূর্বে, এই রাবারবৃক্ষের ভেতর দ্যাখা যায়, ঘুমকান্নারত মৃগয়াদের পাহাড় পোড়া ক্ষত।
আমার বুকে হস্তরক্তস্নান
মৃত পায়রার হাসি হেসে, তথাপি ডেকে ওঠে ময়ূর পাখিশাবক।



রক্তপ্রেত

স্মৃতিবিজড়িত এই প্রজাপতিমুখ; এই রক্তস্ফূর্ত বেদনায় তুমি হেঁটে চলো, সদিচ্ছার অশ্রুত কান্নায়; সেই বিস্তৃত শোক আমি ঘুরে আসি, লজ্জার মতো ঘৃণা তোমাকে পেতে হবে না হে নরবানরের প্রভু।
তুমি লুকিয়ে গ্যাছো, বাল্মীকির কুটিরের ভেতর; তোমার প্রস্রবণ,— প্রিয়তমা।
সন্ধ্যার চাঁদের মৃত ভাবনায় পাখিশাস্ত্র উড়ে চলে গোপনে; আমার স্ফীত ট্রাজেডির ভেতর ভর করে কোনো রক্তপ্রেত।

No comments:

Post a Comment