মনে পড়ে...
শতানীক রায়
ছোটোবেলা থেকে তার মনে হত
কারো মুখে আঁচড় কাটবে। সে বসে আছে। পাশ থেকে ডাকল কেউ। যে-কেউ হতে পারে। কোনো শ্বাপদ হতে পারে। পাহাড়ি হাতি হতে পারে।
কিংবা সারস। এরকম নির্জন দুপুরগুলোতে কোথা থেকে কোন ডাক যে ভেসে আসে কারো খেয়াল
থাকে না। সন্ধ্যা হলেই ভুলে যায় সবাই। কে কবে কোন দুপুরে— ভরা দুপুরে বসে বসে আলাপ করেছিল। তার আলাপের ভাষায় কর্তব্য
ছিল, আর ছিল চেতনার
নির্ভর। সে নির্ভর ও নির্ভরতার ওপর দিয়ে যেতে যেতে দুপুরগুলোকে রাতে রূপান্তরিত
করেছিল। রাতগুলো একটা সময় গভীর রাতে। যে-সমস্ত দিনগুলোতে দু-জন মানুষ দু-জন প্রেমিক অযথাই গল্প করেছিল। মাংসের আলাপ করতে করতে দেখেছিল ওরা নতুন কোনো
জীবিত প্রাণী মৃত হওয়ার পর প্রক্রিয়াকালে কীরকম একটা আঠালো তেলাটে হয়ে ওঠে। আলাপ
গাঢ় হয়েছিল। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার মতো। যাকে অনেকদিন পর খেয়াল করেছিল অভিশাপের মতো।
কোনো আলাপই যেন ঘন মাংসল নিবিড় শস্যভরা না হয়। যেন শুধুই মাংসের দলার চেহারা দেখেই
যতটুকু হয়। তাই...
তাকে খেয়াল করে
নিতে হয় এখন। মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে আঠার দাগগুলো। হাত-পা-মুখ-পেশি সব গুনে
রাখতে হয়। হিসেবের খাতায় যখন আবার ছোটোবেলা গোনা শুরু হবে তখন একে-একে গোক্ষুর বা দাঁড়াশ বেরিয়ে আসবে। দুইজন মা গল্প করেছিল দুপুরে, কোনো এক দুপুরে। সিনেমার দুপুরগুলো পিতৃভাব পিতার বিভাতে ভরা। পিণ্ড হয়ে দুলে
পড়ে যেন। পাহাড়ি শ্বাপদের গল্প তারপর আবার ফিরে মনে পড়ে। পাহাড়ের দুপুরগুলো বড়ো
নিরালা হয়। ঘুমোয় কেউ কেউ কোনো নির্জন জলার মতো। নির্জন কচ্ছপের মতো। ঘুমোতে
ঘুমোতে মনে পড়ে তার এবার সমগ্র সকালের অনুভূতিগুলো জড়ো করতে হবে।
এত কথা ভাবতে
ভাবতে মনে হচ্ছে এমন গল্পে আমিই-বা কোথায় আছি। এইসব গল্পগুলো
কোনো একদিন ঘটেছিল, হয়তো-বা ঘটবে কোনো ভবিষ্যতে। হয়তো
কচ্ছপের শান্ত চাহনির মতো সূর্যের আলো পড়বে বিকেলে। আজ যেমন শস্যপূর্ণ সবকিছু দেখে
যেরকম অনাবিল বিরাগ জন্মাল।...
অনুভূতির পেরেক দিয়ে গাঁথা থাকল গল্পখানি
ReplyDeleteবাহ চমৎকার
ReplyDeleteএটাকে গল্প না বলে লিরিকাল প্রোজ বললে বোধহয় বেটার। আমার একান্তই নিজস্ব মত। লেখাটা ভাল লেগেছে।
ReplyDeleteবাহ!
ReplyDeleteলেখাটায় কিন্তু গদ্য আর গল্পের সীমাকে ভেঙে দেওয়ার প্রয়াস আছে।
আরো লেখো। ভালোবাসা নিও।
বেশ লাগলো...
ReplyDeleteপড়া শেষে মনে একটাই কথা এসেছে ― এ লেখা কবিতার গল্প,গল্পের কবিতা।পাহাড়ে ওঠার সময় দুম করে গাড়ি থেকে নেমে একটু সময়ের জন্য একা হাঁটতে শুরু করলে যেরকম অনুভূতি, এ লেখা পাঠ শেষে সেরকমই অনুভূতি।
ReplyDelete